Wednesday, August 5, 2020

☆ করোনাভাইরাস : ঘরে শিশুর যত্ন ☆

 করোনা নিয়ে বিশ্ব আজ আতঙ্কিত। দিন দিন বাড়ছে করোনা রুগির সংখ্যা। শিশুদের নিয়ে অভিভাবকদের বাড়ছে দূচিন্তা। আপাতত স্কুল কলেজ বন্ধ আছে, শিশুরা ঘরেই অবস্থান করছে। ফলে শিশুরা সহপাঠী এবং বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা ও সময় কাটাতে পারছেনা। এজন্য এইসময় শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত। শিশুদের ঘরোয়াভাবে কিভাবে যত্ন নিতে পারি তার কিছু টিপস দেওয়া হলঃ

১)করোনা ভাইরাস সম্পর্কে শিশুকে সঠিক ধারনা দিন।এটা একটা ভাইরাস, এটা মানবদেহ খুব ছোঁয়াচে রোগ করে যা একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। কেন আমাদের সবাইকে ঘরে থাকতে হবে ? ঘরের বাহিরে গেলে কি সমস্যা হতে পারে?

২) শিশুকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এসময় বাবা - মা সন্তানের পড়াগুলো দেখিয়ে দিতে পারে। পড়াশোনার একটা রুটিন করে দিতে পারেন। প্রতিদিন অল্প অল্প করে পড়ার টার্গেট করে দিতে পারেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পড়া শেষ করতে পারলে তাকে পুরস্কার দিবেন এভাবে তাকে পড়াশোনার প্রতি উৎসাহিত করতে পারেন।

৩) শিশুকে নিয়ে টেলিভিশন এ শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, কার্টুন দেখতে পারেন। শিশুকে গল্প বা কবিতা শোনাতে পারেন। কিছু ইনডোর গেমস আছে যেমনঃ কেরাম, লুডু ইত্যাদি খেলতে পারেন। তবে বেশি সময় নিয়ে টেলিভিশন দেখানো যাবেনা। তাহলে আবার আসক্তি হতে পারে। টেলিভিশন দেখার সময় বাচ্চাদের ছোট ছোট প্রশ্নের উওর দিন।

৪) শিশুকে গঠনমূলক কাজের ধারনা দিন। বাসার ছোট ছোট কাজগুলো করাতে পারেন। বাবা - মা যখন কাজ করে তখন কাজে সাহায্য করতে পারে। কাজের লোক যখন থাকবেনা তখন কিভাবে চলতে হয় সেই শিক্ষা দিন।

৫) পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে শিশুকে ধারনা দিন। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ইমানের অংগ। কিভাবে হাত ধূবে, কত সময় নিয়ে ধূবে, হাঁচি কাশির সময় কিভাবে শিষ্টাচার মেনে চলবে, হাঁচি কাশির পর কিভাবে টিস্যু ব্যবহার করবে, টিস্যু ব্যবহারের পর সেটা কিভাবে ডাস্টবিনে ফেলবে, লিফট ব্যবহার করলে লিফলেট বাটন কিভাবে চাপবে ও কিভাবে দুরত্ত্ব বজায় রেখে দাঁড়াবে এগুলোর সঠিক ধারনা দিন। বার বার হাত ধোবার অভ্যাস গড়ে তুলুন। নাক, মুখে এবং চোখে যেন বার বার হাত না দেয় সেই শিক্ষা দিন।

৬) বাড়িতে কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে, শিশুদের কে অসুস্থ ব্যক্তি হতে দূরে রাখুন। প্রয়োজনে অসুস্থ ব্যক্তিকে আলাদা রুমে রাখুন।

৭) এসময় শিশুর খাবারের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখবেন। একই ধরনের খাবার যেন প্রতিদিন না খাওয়ানো হয়। খাবারের ভিন্নতা আনেন। শিশুকে পরিমিত খাওয়াতে শেখান। বেশি বেশি ভিটামিন - সি, জিঙ্ক ও আয়রন যুক্ত খাবার খেতে দিতে হবে। ফাস্টফুড জাতীয় খাবার, কোমল পানীয় এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

৮) শিশু অসুস্থ হলে ডাক্তারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করুন। এখন মোটামুটি সব ডাক্তারই ফোনে ফোনে চিকিৎসা দিচ্ছে। প্রথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর যদি ভাল না হয়, যদি ডাক্তার স্বশরীরে দেখতে চায় অথবা অতিপ্রয়োজনীয় হলেই কেবল ডাক্তারের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যান।

ডাঃ নাজমুল ইসলাম
রেজিস্টার
শিশু সার্জারি বিভাগ
ঢাকা শিশু হাসপাতাল।

No comments:

Post a Comment